ওমর ফারুক হিরু :
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে আসা তৃতীয় লিঙ্গের পযটককে মারধর, কানে ধরে উঠা-বসা সহ হেনস্ত করার তিনটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এ ঘটনায় বিভিন্ন মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনার জেরে শুক্রবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভিডিও ফুটেজটিতে দেখা মেলা যুবকটিকে আটক করেছিল। এতে হেনস্তার শিকার ভূক্তভোগী পিয়ামনী নামে একজন বাদী হয়ে ছয়জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করে। শনিবার বিকালে মামলা দায়ের হওয়ার পর অভিযুক্ত আটক যুবককে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
আটক মোহাম্মদ ফারুকুল ইসলাম (২৩) শহরের ভোলা বাবুর পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা। তিনি পরিবারের সাথে ওই এলাকায় থাকেন। তাদের আদি বাড়ী চট্টগ্রামের লোহাগড়া উপজেলার চুনতি এলাকায়।
ডিবির পরিদর্শক জাবেদ মাহমুদ শুক্রবার রাতে জানিয়েছিলেন, সৈকতে মারধর ও নির্যাতনের কিছু ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে। পরে পুলিশ ফুটেজগুলোতে দেখা মেলা যুবকটিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হন। শুক্রবার রাতে শহরের ভোলা বাবুর পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন এলাকায় সদর থানা ও ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।
কক্সবাজার জোনের ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম জানিয়েছেন, হেনস্তা শিকারের ভিডিও ৩ টি তিনি দেখেছেন। এরপর খোঁজ খবর নিয়ে জেনেছেন ছাত্র সমন্বয় পরিচয়ে কিছু শিক্ষার্থী সৈকতে ভ্রমনে আসেন গত ১১ সেপ্টেম্বর দুপুরে। এসময় তৃতীয় লিঙ্গের কয়েকজনকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়া হয়। এটি আইনগত অপরাধ। ঘটনার সময় উপস্থিত পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন জানান, ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে আরোহি এবং প্রিয়ামনী নামে দুইজনকে হেনস্ত করতে দেখা যায়। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত যুবককে আটক করে। পরে শনিবার বিকালে তৃতীয় লিঙ্গের হেনস্তা শিকার প্রিয়া মনি বাদি হয়ে ৬ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা করেন। আটক যুবকসহ অজ্ঞাত আরও ৫ জনকে আসামি করে দায়ের করা এজাহারটি মামলা হিসেবে নথিভূক্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আটক যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের পর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলার অপর আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।
এদিকে পুলিশের অভিযানে আটক মোহাম্মদ ফারুকুল ইসলাম নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব পর্যায়ের দাবী করলেও তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেউ নন বলে দাবি করেছেন কক্সবাজারের স্থানীয় সমন্বয়কেরা।
তবে আন্দোলনের সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নানা মত ও পথের ছাত্র-জনতার স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণের তথ্য দিয়ে নেতৃত্ব পর্যায়ের স্থানীয় সমন্বয়ক শাহেদুল ইসলাম শাহেদ বলেন, “ আটক যুবক জেলার সমন্বয়ক বা নেতৃত্ব পর্যায়ের কেউ নন। আন্দোলনে যেহেতু শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নানা শ্রেণী-পেশা, মত ও পথের মানুষের অংশগ্রহণ ছিল; আটক যুবকেরও অংশগ্রহণ থাকতে পারে। তাই বলে তিনি সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়ার এখতিয়ার রাখেন না। যে অপরাধ করবে তার শাস্তি হতে হবে।
/টিআর
আপনার মতামত লিখুন :