বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে কক্সবাজারে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা


Coxsbazarreport.com প্রকাশের সময় : জুন ২০, ২০২৫, ২:৪১ অপরাহ্ন /
বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে কক্সবাজারে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা

কক্সবাজার রিপোর্ট ডেস্কঃ

বিশ্ব শরণার্থী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গা ও স্থানীয় তরুণদের অংশগ্রহণে আয়োজিত রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ক্যাম্প-৪-এ শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের কার্যালয়, জাতিসংঘ এবং অন্যান্য সহযোগী সংস্থার যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।

এ বছরের প্রতিপাদ্য ছিল- “শরণার্থীদের সাথে সংহতি”। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এসময় জাতিসংঘ সংস্থাসমূহ, আইএসসিজি, অংশীদার এনজিও প্রতিনিধি ও বিভিন্ন দাতা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

রচনা প্রতিযোগিতার বিজয়ীরা হলেন, ফায়াজুল ইসলাম (ইংরেজি বিভাগে প্রথম) শোয়াইব বিন হাসান (বাংলা বিভাগে প্রথম), সরোয়ার শাহ (প্রথম রানার-আপ), মোহাম্মদ আরস (দ্বিতীয় রানার-আপ)।

চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা হলেন, আহমেদ রাফসান (প্রথম পুরস্কার), ফিওনা নুসাইবা জুহা (প্রথম রানার-আপ), মোহাম্মদ শাহাদ (দ্বিতীয় রানার-আপ)।

প্রতিযোগিতায় ৮ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশু এবং ১৬ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণরা অংশ নেন। আয়োজকেরা জানান, প্রতিযোগিতার শিরোনাম ছিল ‘আমার প্রতিবেশী, আমার বন্ধু’, যা স্থানীয় ও রোহিঙ্গা কমিউনিটির মাঝে শান্তি, সহানুভূতি ও সহাবস্থানের বার্তা পৌঁছে দেয়। নির্বাচিত রচনাগুলো শিগগিরই বাংলা ও ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত হবে এবং নির্বাচিত চিত্রকর্মগুলো প্রদর্শিত হবে কমিশনারের কার্যালয়ে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মনে রাখতে হবে—আপনারা একা নন। স্থানীয় জনগণ ও সরকার সবসময় আপনাদের পাশে আছে। আমরা ন্যায় ও সমতার ভিত্তিতে কাজ করি, এটাই আমাদের মূলনীতি।”

ইউএনএইচসিআর এর সাব অফিস প্রধান ইয়োকো আকাসাকা বলেন, “শরণার্থীদের প্রতি সংহতি মানে শুধু আশ্রয় দেওয়া নয়, বরং তাদের কণ্ঠস্বর শোনা এবং আশার আলো দেখানো। আমরা পাশে আছি।”

আইওএম-এর চিফ অব মিশন ল্যান্স বনো বলেন, “বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে সংহতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তরুণরা রোহিঙ্গাদের স্বপ্ন ও সহিষ্ণুতা সুন্দরভাবে তুলে ধরেছে।”

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, “রোহিঙ্গারা সম্মানের সঙ্গে নিজ দেশে ফিরে যেতে চায়। আমরা সেই প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা কামনা করি।”

আইএসসিজি-এর প্রধান সমন্বয়কারী ডেভিড বাগডেন বলেন, “বাংলাদেশ সরকারের উদারতা এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সহায়তা রোহিঙ্গা সংকটে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। আমরা সকলকে ধন্যবাদ জানাই।”

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের সামরিক নিপীড়নের মুখে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। বর্তমানে কক্সবাজার ও ভাসানচরে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে, যা বিশ্বে সর্ববৃহৎ শরণার্থী জনগোষ্ঠীর একটি। এই প্রেক্ষাপটে বিশ্ব শরণার্থী দিবস বাংলাদেশের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।

//