চট্টগ্রামে যৌতুকের দাবীতে নির্যাতনের শিকার হয়ে ফারহানা ইয়াছমিন রূপা (২৩) নামের এক গৃহবধূ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেছে। এদিকে নিহতের স্বামী ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ নিহতের পরিবারের।

শনিবার (২৮) সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টার দিকে নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন এশিয়ান হাউজিং সোসাইটির জাকির ম্যানশনের ২য় তলার একটি ফ্ল্যাটে এই ঘটনা ঘটে। নিহতের স্বামী মারুফ চট্টগ্রাম আদালতের একজন আইনজীবী।

পাঁচলাইশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোলাইমান ‘বার্তা বাজার’কে জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে মারুফের বাসার শয়ন কক্ষ থেকে গৃহবধু রূপার ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ওই সময় স্বামী মারুফ বাসায় উপস্থিত ছিলেন। এই ঘটনায় নিহতের পিতা বাদী হয়ে রূপার স্বামী মারুফকে প্রধান অভিযুক্ত করে মারুফের মা, খালা ও বোনের নাম উল্লেখ করে আত্মহত্যা পরোচনার একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

নিহতের পরিবার জানায়, গত ২০২০ সালে টেকনাফ পৌরএলাকার ফারহানা ইয়াছমিন রূপা (২৩) এর সাথে চকরিয়া চিংগা ফুলতলা এলাকার ফরিদুল আলমের ছেলে মারুফ মোহাম্মদ নাজেবুল আলমের সাথে ২৫ লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য্য করে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে একটি ৩ বছরের ছেলে সন্তান রয়েছে।

বিয়ের এক বছর পর থেকে স্বামী মারুফ, মা-বোন ও খালা মিলে রূপাকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতেন। নির্যাতন সহ্যকরতে না পেরে মেয়ের সুখের আশায় বেশ কয়েক দফা যৌতুক হিসেবে কয়েক লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। সর্বশেষ রূপাকে চট্টগ্রামে ফ্ল্যাট কিনে দেয়ার জন্য শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। ফ্ল্যাট না দিলে তালাক দেয়ার হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বেশ কিছু দিন আগে রূপা মেসেজ দিয়ে তার আত্মীয় স্বজন ও বান্ধবীদেরকে নির্যাতনের কথা জানিয়ে আত্মহত্যা করবে বলে জানায়। আত্মহত্যার আগের দিন যৌতুকের জন্য তাকে শারিরীক ও মানষিক নির্যাতন করে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়।

পরিবার আরো জানায়, ঘটনার পরে অভিযুক্ত মারুফ চট্টগ্রামের বেশ কয়েকজন আইনজীবীদের নিয়ে প্রভাব বিস্তার করে বাদীপক্ষ আইনী সহায়তা না পেতে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাবিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিষয়টি জানতে স্বামী মারুফের মুটোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে, ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানাযায়নি।

বিষয়টি পাঁচলাইশ জোনের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুখলেছুর রহমানের দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি ‘বার্তা বাজার’কে জানান, ঘটনাটি জেনেছি। বাদী পক্ষ আইনী প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হলে সংশ্লিষ্টি থানার ওসিকে তাদের পূর্ণ সহযোগীতার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এখানে কেউ কোন প্রকার প্রভাব বিস্তার করার সুযোগ পাবে না।

//