কক্সবাজার রিপোর্ট :
দীর্ঘ ৭ বছর ৯ মাস পর কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদীতে মাছ ধরার অনুমতি পেলেন জেলেরা। হাইকোর্টের আদেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে শর্তসাপেক্ষে এ অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সিভিল স্যুট শাখার সহকারী কমিশনার মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক স্মারকে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, হাইকোর্টের রুলনিশির আলোকে পিটিশনারের আবেদন নিষ্পত্তি করে জেলেদের মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া হলো। তবে এ অনুমতি পাঁচটি শর্তসাপেক্ষে প্রদান করা হয়েছে।
শর্তসমূহ হলো- সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নাফ নদীর বাংলাদেশ সীমানার মধ্যে শাহপরীর দ্বীপ থেকে টেকনাফ জেটিঘাট পর্যন্ত মাছ ধরা যাবে। মাছ ধরতে যাওয়ার সময় বিজিবির নির্ধারিত পাঁচটি চেকপোস্টে টোকেন/পরিচয়পত্র দেখাতে হবে এবং ফেরার সময় তল্লাশির জন্য সহযোগিতা করতে হবে। কোনোভাবেই বাংলাদেশের জলসীমা অতিক্রম করা যাবে না। শুধুমাত্র মৎস্য অধিদপ্তরের হালনাগাদকৃত নিবন্ধিত জেলেরা মাছ ধরতে পারবেন। এ অনুমোদন সাময়িক, তিন মাস পর সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে নবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন।
শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল গনি বলেন, ‘‘নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের খবরে জেলে সম্প্রদায়ের মাঝে আনন্দ-উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হলো।’’
টেকনাফ জালিয়াপাড়ার শফি উল্লাহ মাঝি বলেন, ‘নাফ নদীতে মাছ শিকারে নিষেধজ্ঞা থাকায় চরম অর্থনৈতিক সংকটে ছিলাম। অবশেষে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর মাছ ধরার অনুমতি পেয়ে অনেক খুশি লাগছে।’
জেলে ছুরত আলম বলেন, ‘‘নাফ নদীতে পুনরায় জাল ফেলতে পারবো জেনে ভালো লাগছে। প্রতিদিন মাছ ধরে লোকজনে যে ঋণ পায় তা পরিশোধ করতে পারবো।’’
টেকনাফ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে নাফ নদীতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। প্রায় ৮ বছর পর পুনরায় মাছ ধরার অনুমতি পেয়ে জেলেরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।
//টিআর
আপনার মতামত লিখুন :