পটুয়াখালীর পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলামসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অবৈধ নিয়োগের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করেছে। গত মঙ্গলবার পটুয়াখালী দুদকের সহকারী পরিচালক তাপস বিশ্বাস বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, তারা প্রায় ৫৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা সরকারি তহবিল থেকে আত্মসাৎ করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৩ সালের ৩ মার্চ নিয়োগ বিধি না মেনে দেলোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে পটুয়াখালী পৌরসভায় সহকারী অ্যাসেসর পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে নিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তিনি জাল সনদে চাকরি নিয়েছেন। এছাড়া ২০১১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর স্বাস্থ্য সহকারী পদে সুমন হাওলাদারকে নিয়োগ দেওয়া হয়, যার শিক্ষাগত যোগ্যতাও বিধিমালা অনুযায়ী ছিল না।
অন্যদিকে,অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া এই দুই ব্যক্তির সরকারি কোষাগার থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যথাক্রমে ২৮ লাখ ৬২ হাজার ৩২৪ টাকা ও ২৫ লাখ ৮১ হাজার ৫৩৭ টাকা আত্মসাৎ করার তথ্য রয়েছে। অভিযোক্ত মেয়রসহ সংশ্লিষ্টরা এই বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় দুর্নীতি আরও বিস্তার পেয়েছে।
দুদকের সহকারী পরিচালক তাপস বিশ্বাস বলেন, “সরকারি নিয়ম লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং এ কারণে সরকারি তহবিল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা দ্রুত মামলাটি কার্যকর করতে কাজ করছি।”
স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনার ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। একজন স্থানীয় ব্যক্তি বলেন, “সরকারি টাকা যদি এভাবে আত্মসাৎ হয়, তবে সাধারণ মানুষের উন্নয়ন হয় কীভাবে? প্রশাসনের উচিত এমন অনিয়ম বন্ধ করা।”
অপর একজন বলেন, “এ ধরনের দুর্নীতি বন্ধ না হলে এলাকার উন্নয়নের স্বপ্ন কখনও পূরণ হবে না।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অবৈধ নিয়োগ ও অর্থ আত্মসাৎ ঠেকাতে প্রয়োজন কড়াকড়ি আইন প্রয়োগ এবং স্থানীয় প্রশাসনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। তারা আরও বলেন, “সরকারি সম্পদের যথাযথ ব্যবস্থাপনা না হলে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।”
এদিকে, স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই মামলার বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :