ওমর ফারুক হিরু :
সনাতন ধর্মালম্বীর সর্বৃহৎ দুর্গোৎসব ঘিরে টানা ৪ দিনের ছুটিতে লাখো পর্যটকের পদাচরণে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। বৃহস্পতিবার থেকে প্রকৃতি উপভোগের উদ্দেশ্যে আসা পর্যটকের ভরপুর এখন কক্সবাজার। বেড়াতে আসা পযটকদের নিরাপত্তায় কঠোর অবস্তানে প্রশাসন।
শুক্রবার সকাল থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্ট সহ নানা পর্যটক স্পট ঘীরে এসব পর্যটকদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা মিলে। প্রকৃতির রূপে এখন শরতের বিমোহিত আকাশের মিষ্টি রোদে সাদা মেঘের খেলা। আর এই প্রকৃতির সৈকতের বালিয়াড়িতে মুক্তি ঘুরা-ফেরা, সৈকতে সাজানো বীচ ছাতায় বসে শীতল হওয়া উপভোগ করতে যেমন পর্যটকদের দেখা মিলেছে তেমনি সাগরের লোনা জলে শরীর ভাসিয়ে স্নানমগ্নও ছিলেন পর্যটকরা। আর অনেকেই সৈকতের ঘোড়ার পিঠে উঠে ছবি ধারণ, বীচ বাইকে ঘুরা ফেরা করতেও দেখা যায়। একই সঙ্গে দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী ও পাটুয়ারটেক সৈকত জুড়েও ছিল দিনভর পর্যটকের আনাগোনা।
হোটেল ব্যবসায়ীরা জানান, আগামী ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটক সমাগম সমান থাকবে কক্সবাজারে। এরমধ্যে ১০ থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত ৯০-৯৮ শতাংশ হোটেল রুম বুকিং হয়েছে। আর ১৪-১৯ অক্টোবর পর্যন্ত ৮৫ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে। তবে পর্যটক বাড়ার সাথে সাথে কিছু আবাসিক প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন পর্যটকরা।
কক্সবাজার হোটেল-গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকে ছুটিতে পর্যটকরা কক্সবাজার আসতে শুরু করেছে। ৫ শতাধিক আবাসিক প্রতিষ্ঠানের প্রায় কক্ষেই বুকিং রয়েছে শুক্রবার। হিসেবে মতো এক লাখ ২০ হাজারের বেশি পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করছে। এসব পর্যটকরা রবিবার পর্যন্ত থাকবে। এরপর চাপ একটু কমলেও বুকিং কিছুটা রয়েছে।
সেন্ডি বিচ হোটেল ও রেস্তোরাঁর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও বৃহত্তর বীচ ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি আবদুর রহমান বলেন, ‘অনেকদিন পর টানা ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত কক্সবাজার চেনা রূপে ফিরেছে। পর্যটক আসায় ব্যবসায়ীরা খুশি।
হোটেল দি কক্স টু-ডের সহকারি মহাব্যবস্থাপক আবু তালেব শাহ বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠানে সব কক্ষ বুকিং রয়েছে।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘পর্যটক আগমন বেশি হওয়ায় আগে থেকেই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ও অপরাধ দমনে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছিল। সৈকতে পোশাকধারী পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে টহল ও সাদা পোশাকের পুলিশ রয়েছে। টেকনাফ ও ইনানীসহ সব পর্যটন স্পটে ট্যুরিষ্ট পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে অবস্থান ও কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে পুরো সৈকত নজরদারির আওতায় রয়েছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ‘পর্যটক এবং পূজা ঘিরে সৈকতের প্রবেশপথে তল্লাশি চৌকি স্থাপন, পোশাকধারীর পাশাপাশি সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করছে। কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, ‘ভ্রমণপিপাসুদের বিচরণ নির্বিঘ্ন করতে জেলা প্রশাসনের নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেটদের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছেন। কোথাও অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণের নিদের্শ দেয়া আছে।
//টিআর
আপনার মতামত লিখুন :