ওমর ফারুক হিরু :
কক্সবাজার শহরের মাংস ও সবজির বিক্রেতারা রশিদ ছাড়া পৌরসভার হাসিল দিতে রাজী নন। গত পাঁচ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে বন্ধ রয়েছে বাজার ইজারাদারদের পক্ষ থেকে পৌরসভার হাসিল নেওয়া। তার মধ্যে ছাত্রপরিষদ বাজারে এসে জানিয়ে দেয় ফ্যাসিবাদ সরকারের লোকজনের নেওয়া ইজারায় কোন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আর পৌরহাসিল দেবেনা। সেই থেকে সবজি ও মাংস বিক্রেতারা পৌরহাসিল দেয়না। যদিও এরই মধ্যে ব্যবসায়ীরা পৌরসভায় যোগাযোগ করে কোন সদোত্তর পায়নি বরং তৎকালিন পৌরসভার নারী প্রশাসক জানান সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত কেউ হাসিল দেবেনা। এদিকে গত ৩ তারিখ থেকে সবজি ও মাংস বিক্রেতা থেকে পৌরসভার হাসিলের জন্য বিচ্ছিন্নভাবে কিছু লোক আসছে। তাদের সাথে পৌরসভার লোকজনও রয়েছে। তার যার কাছে যেমন পারছে তেমন হাসিল আদায় করছে। কারো কাছে দেড়’শ, কারো কাছে আড়াইশ আবার কারো কাছে ৩’শ টাকা। অনেকে তাদোর টাকা দেয়নি।
বাজারের বিক্রেতারা পৌর হাসিল দিতে রাজি কিন্তু রাশিদ বা সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়া টাকা দিতে রাজী নন।এসব কথা বলেন বড় বাজার মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নুর আলম ও সবজি ব্যবসায়ীদের নেতৃত্ব থাকা আবু ছালেহ।
মাংস বিক্রেতারা আরো বলেন, বড় বাজারোর মাংস বিক্রেতারা এমনিতেই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে মাংস বাজারের মার্কেট ভেঙ্গে ফেলা হয় নতুনভাবে ভবণ নির্মাণের। ওই সময় ভাই ভাই তৎকালীন মেয়র মাহবুবুর রহমান বলেন ৩ মাস পর ভেঙ্গে ফেলা বাজারটি বহুতল ভবণে পরিণত করা হবে। এদিকে ১ বছর ২ মাস অতিবাহিত হলেও ভবনের কাজ শেষ হয়নি। এখন অবশ্য ওই ভবনের কাজই বন্ধ রয়েছে। এর ফলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এরমধ্যে পৌর হাসিলের নামে অস্বচ্ছ কার্যক্রমে তারা হতাশ ও ক্ষুব্ধ। পুনরায় পৌরহাসিল তুলছে পালিয়ে যাওয়া সরকার দলের লোকজন। বিক্রেতারা বলছেন স্বচ্ছতার মধ্যে দিয়ে পৌর হাসিল দিতে রাজী। নয়ত না। এছাড়া ইজারা ও পৌরহাসিলের ধোঁয়াশা নিয়ে সন্দেহ ব্যবসায়ীদের। ব্যবসায়ীদের অনেকে বলছে পৌরসভার একটি মহল সুবিধা নিয়ে এই কাজ করছেনাতো?
একাধিক মাংস ও সবজি বিক্রেতার দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, গত ৩ ডিসেম্বর আবু সাদ্দাম (২৯), রমজান (৩০) ও তৈয়বের নেতৃত্ব ৭-৮ জনের একদল লোক মাংস এবং সবজি বিক্রেতাদের কাছ থেকে পৌরহাসিল আদায় করতে আসে।
তারা শহরের বড় বাজার, বাহারছড়া বাজার, খুরুশকুল রাস্তার মাথা, পিটি স্কুল ও কলাতলী বাজারের অন্তত ২০ টি মাংস বিক্রির দোকান ও শতাধিক সবজির দোকানে পৌরসভার নাম বলে হাসিলের জন্য যায়। এসব বাজারের অনেকে তাদের হাসিল দিলেও বেশিরভাগই দেয়নি। তারা কারো কাছ থেকে দেড়শ কারো কাছ থেকে ২’শ আবার কারো কাছ থেকে ৩’টাকা আদায় করোন। তারা ইজারা নেওয়ার আপডেট কোন প্রমান দিতে পারেনি। যদিও তারা আওয়ামী লীগ সরকারের পদবীধারী লোক এবং ওই সময়ে ইজারা নেওয়া লোকজন।
তারা পৌরহাসিল আদায়ে সুবিধা করতে না পারায় পরে পৌরসভার পোশাকদারী লোকজন আসে পৌর হাসিল আদায়ে। এবারেও অস্বচ্ছতার কারণে পৌর হাসিল দেননি অনেক বিক্রেতা। তাদের বরাবরের মত অভিযোগ কোন ধরণের টুকোন বা রশিদ না দিলে পোর হাসিল দেবেননা। তারা আর কোন প্রতারণার শিকার হতে চায়না।
ব্যবসায়ীদের মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জনে বলেন, পৌরসভার একটা মহলকে সুবিধা দিয়ে বিতাড়িত সরকারের গ্রুপটি পৌরহাসিল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি করতে চাইছে। বিক্রেতারা পৌরহাসিল দিতে চায় তবে বৈধ ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে।
এই প্রসঙ্গে কক্সবাজার পৌরসভার প্রশাসনিক কর্নকতা খোরশেদ আলম বলেন, পোরসভা আগেও রিসিভ দিয়ে বাজারের হাসিল আদায় করেবি। দেশের পরিস্থিতির কারণে গত ৪ মাস পৌরসভার হাসিল আদায় করা হয়নি। তার মানে এই না যে পোরহাসিল দেবেনা। এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মিটিং করা হয়েছে। তবে সিদ্ধান্ত হচ্ছে হাসিল আদায়ের সাথে পোরসভার রিসিভ দেওয়ার হবে। তবে ইজারার প্রসঙ্গে তেমন কোন তথ্য দিতে পারেননি।
সচেতন ব্যবসায়ী বলেন সঠিকভাবে ইজারার মাধ্যমে ব্যবসায়ীদোর কাছ থেকে পৌরকর আদায় করা হোক। এ নিয়ে কেউ যেন আর অন্যায়-অত্যাচার-অবিচার করতে না পারে।
//টিআর
আপনার মতামত লিখুন :