বাংলাদেশিসহ ৭২ জনের প্রাণ নেওয়া গ্রেনফেল অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ


Coxsbazarreport.com প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৪, ১:২১ অপরাহ্ন /
বাংলাদেশিসহ ৭২ জনের প্রাণ নেওয়া গ্রেনফেল অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ

লন্ডনের ভয়াবহ গ্রেনফেল টাওয়ার অগ্নিকাণ্ডের প্রায় ৭ বছর পর চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার জন্য সরকারসহ ভবন নির্মাণে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অবহেলাকে দায়ী করা হয়েছে।

২০১৭ সালের ১৪ জুন পশ্চিম লন্ডনের কেনসিংটনের বহুতল ভবন গ্রেনফেল টাওয়ারের আগুনে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একই পরিবারের পাঁচ সদস্যসহ ৭২ জনের প্রাণহা‌নি ঘটে। ভয়াবহ ওই আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হন আরও প্রায় দেড়শতাধিক মানুষ।

চূড়ান্ত প্রতিবেদনে ভবনের বাহ্যিক প্রলেপে দাহ্য উপাদান সম্বলিত পদার্থ ব্যবহারের জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করা হয়েছে। ভবনের রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ও দাহ্য উপাদানযুক্ত পদার্থ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে এই অগ্নিকাণ্ডের জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় ও জাতীয় কর্তৃপক্ষকে তাদের ব্যর্থতার জন্য দায়ী করা হয়েছে।

এর আগে, ২০১৯ সালে তদন্তের প্রথম প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভবনের ৫ম তলায় একটি রেফ্রিজারেটরে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত। পরে তা অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। মূলত ২০১৬ সালে ভবনটিতে সৌন্দর্যবর্ধন ও বৃষ্টিপ্রতিরোধক হিসেবে একধরণের প্রলেপ ব্যবহার করা হয়েছিল, যাতে দাহ্য অ্যালুমিনুয়ামের উপাদান ছিল।

তদন্তকারী দলের প্রধান মার্টিন মুর বিক বলেছেন, ‘একদম সহজ সত্যটা হচ্ছে, প্রতিটি মৃত্যুই এড়ানো যেত।’

অগ্নিকাণ্ডে নিহত বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত ব্রিটিশ পরিবারের সদস্যরা ছিলেন রাবেয়া ও কামরু মিয়া দম্পতি এবং তাদের তিন সন্তান হোসনা বেগম, হামিদ ও হানিফ। আগুন ছড়িয়ে পড়লে বৃদ্ধ মা-বাবাকে নিয়ে বের হওয়ার কোনও সুযোগ সন্তানদের ছিল না।

অগ্নিকাণ্ডের প্রায় দু’সপ্তাহ পর তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে নিহতদের স্বজনরা জানিয়েছেন, ডেন্টাল রেকর্ড থেকে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছিল।

নিহতদের এক স্বজন সামির আহমেদ বলেন, ‘সন্তানরা তাদের মা-বাবার সঙ্গেই থেকে যায়। পরিবার ছিল তাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তারা একসঙ্গে বাস করতেন, আবার একসঙ্গেই মারা যান।’

পরিবারটি ভবনের সতের তলায় বাস করত। আগুন ছড়িয়ে যাওয়ার পর আত্মীয়রা ফোন দেওয়া শুরু করলে সন্তানরা জানিয়েছিলেন, মা-বাবাকে ছেড়ে তারা কোথাও যাবেন না। তারা ছিলেন মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বাসিন্দা। তাদের পরিবারের অন্য এক সদস্য বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবার আবাসনের সুযোগ পেয়েছেন।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এমপি আফসানা বেগম বলেছেন, ‘এই ৭২ জনের মৃত্যু এড়ানো যেত। বিচার নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা এ নিয়ে কথা বলে যাবো।’