লালমনিরহাটের গোশলা বাজার এলাকায় ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে একদল ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে সেলুন পরিচালনাকারী এক পিতা ও পুত্রকে হেনস্তা করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।
আটক হওয়া দুজন হলেন—পরেশ চন্দ্র শীল ও তাঁর ছেলে বিষ্ণু চন্দ্র শীল। স্থানীয়দের অভিযোগ, তারা নবী ও দাঁড়ি নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন।
তবে আটক ব্যক্তিদের পরিবারের দাবি, এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ। পরেশ চন্দ্র শীলের পুত্রবধূ দিপ্তি রানী শীল জানিয়েছেন, ঘটনার সূত্রপাত হয় একটি সাধারণ তর্ক থেকে। এক তরুণ চুল কাটিয়ে টাকা কম দেওয়ার চেষ্টা করলে কথা কাটাকাটি হয়। এরপর থেকেই তাকে হুমকি দিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তিনি।
স্থানীয় আল-হেরা জামে মসজিদের ইমাম মোঃ আব্দুল আজিজ ধর্ম অবমাননার অভিযোগ এনে থানায় মামলা করেন। মামলার এক সাক্ষী খতিব জোবায়ের হোসেইন স্বীকার করেন, তিনি ও মামলার বাদী কেউই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নন—তারা অভিযোগকারীদের মুখে শুনেই নিশ্চিত হয়েছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, শুক্রবার ঘটনাটি ঘটলেও অভিযুক্তদের আটক করা হয় রবিবার, স্থানীয়দের ঘেরাও ও পুলিশের হস্তক্ষেপে।
লালমনিরহাট সদর থানার পরিদর্শক মোঃ সাজু মিঞা জানিয়েছেন, “ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে। সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, আটক হওয়ার পর থেকেই তারা নানাভাবে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন। দিপ্তি রানী শীল বলেন, “বাড়িতে থাকতেই ভয় লাগছে, কে কখন কী করে ফেলে বলা যাচ্ছে না।”
স্থানীয় বাজারের কয়েকজন জানান, ঘটনাটি পরিকল্পিত বলে মনে হয়েছে তাদের কাছে। চুল কাটার সময় ধর্ম অবমাননার কোনো প্রত্যক্ষদর্শী পাওয়া যায়নি বলে দাবি করেন তারা।
আপনার মতামত লিখুন :