ওমর ফারুক হিরু
চলার পথে টাকা না দিয়ে ভ্রাম্যমান বাদাম বিক্রেতার কাছ থেকে এক-দুই’টা বাদাম নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য হরহামেশা দেখা যায়। আবার অনেকে এই কাজ করার সময় ন্যুনতম অনুমতি পর্যন্ত নেননা। এই তালিকায় সমাজের অনেক ভাল অবস্থানের লোকজনও রয়েছে। বিষয়টি ছোট এবং সাধারণ মনে হলেও এই ক্ষুদ্র এই ব্যবসায়ীদের কাছে এটি হতাশা ও কষ্টের। তারা বলছেন একেকজন করে হিসাব করলে সারা দেশে লাখ-লাখ বাদাম বিক্রেতার হক মেরে খাচ্ছেন অনেক মানুষ।
কক্সবাজার শহরের অন্তত ২০ জন বাদাম বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, কম-বেশি প্রায় সব বাদাম বিক্রেতা এই ভোগান্তির সাথে পরিচিত। অনেক সময় তাদের সারাদিনের লাভের অংশটাই চলে যায় লোকজনের এই অপকর্মের ফলে। দুই-চারটা সহ্য করা গেলেও লাগাতর এমন অন্যায় মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের। চোখের সামনেই একের পর এক তাদের সাথে এমন অন্যায় হলেও প্রতিবাদ করার সাহস পায়না। জড়াতে চায়না বাড়তি ঝামেলায়।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বাদাম বিক্রেতা সাইফুল ইসলাম জানান, ‘কিছু লোকজন এমনিতেই বাদাম খাবে এই কথা মাথায় রেখেই বীচে বাদাম বিক্রি করতে নামেন। স্থানীয়দের পাশাপাশি অসচেতন অনেক পর্যটকও এই কাজ করেন। এতে মাফ করে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকেনা।
কক্সবাজার শহরের কোর্ড বিল্ডিং এলাকার বাদাম বিক্রেতা লিয়াকত হোসেন জানান, ‘প্রতিটি বাদামে আমার পরিবারের রিজিক রয়েছে। সুতরাং কেই টাকা না দিয়ে বা অনুমতি ছাড়া একটি বাদাম নিয়ে যাওয়া মানে ওই ব্যক্তি আমার পরিবারের রিজিক নিয়ে গেলে। এটি সত্যি কষ্টের। কেনার সামর্থ্য না থাকলে অন্তত বলে নিলে মনে শান্তি লাগত। যদিও অনেকে জিজ্ঞেস করে নেন।
হাসপাতাল সড়ককের আরেক ভ্রাম্যমান বাদাম বিক্রেতা আব্দুর রহমান বলেন, যে ব্যক্তি আমার হক খাচ্ছে তাকে আমি মাফ না করলে সে কখনো মাফ পাবেনা। এই চিন্তা করে সবাইকে মাছ করে দেই। তবে অনেক সময় কষ্ঠ লাগে যখন দেখি এক-দুইটার পরিবর্তে এক মুঠো বাদাম নিয়ে যায়। কারণ দিন শেষে বাদাম বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া যায় ওই দিয়ে সংসার চলেনা।
এই প্রসঙ্গে পাহাড়তলীর এক মসজিদের ইমাম মৌলানা দিদারুল ইসলাম বলেন, কোনভাবেই কারো হক মেরে খাওয়া যাবেনা। খেলে তওবা করতে হবে। তওবা কবুলের শর্ত হলো যার হক নষ্ট করা হয়েছে তার পাওনা তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে। আর তা সম্ভব না হলে মাফ চেয়ে নিতে হবে। তবে যারা না জেনে এই অপকর্ম করেছে তাদের এখনই শোধরানো দরকার।
ছোট এবং সাধারন মনে করে অনেকে জানা-অজানায় এই কাজ করছে। এতে ধর্মিয়ভাবে, সামাজিকভাবে এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এই অসুস্থ মানসিকতা দুর করে সুষ্ঠু-সুন্দর সমাজ বির্নিমানের কথা বলছেন সচেতন মহল।
//টিআর
আপনার মতামত লিখুন :